ফারুক আহমেদ 


প্রখ্যাত সাংবাদিক-সাহিত্যিক গৌরকিশোর ঘোষের শতবর্ষ জন্ম-জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় ২০ জুন রবীন্দ্র সদনে সন্ধ্যা ছ'টায়।                                     
ওই অনুষ্ঠানে অতি মনোজ্ঞ বক্তব্য রাখেন নেতাজী রিসার্চ ব্যুরোর সভাপতি ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ডনার অধ্যাপক সুগত বসু। তিনি 'গৌরকিশোর ঘোষ শতবর্ষ বক্তৃতা' দেন। এছাড়া সমাজসেবী মেধা পাটকর  'মনুষ্যত্বের সন্ধানে' শীর্ষক অপূর্ব সুন্দর  ভাষণ দেন।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ‘রূপদর্শী গৌরকিশোর ‘নামে তাঁর উপর রচিত এক স্মরণগ্রন্থ  উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী বক্তব্য দেওয়ার সময়ে গৌরকিশোর ঘোষের উপর অনেক অজানা তথ্য তুলে ধরেন স্বনামধন্য লেখক ও নাট্যকার অধ্যাপক ব্রাত্য বসু। অনুষ্ঠানে অপূর্ব সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রিয়াঙ্গী লাহিড়ী। পরিশেষে গৌরকিশোরের উপর নির্মিত শৈবাল মিত্র পরিচালিত ‘রূপদর্শী’ নামে এক তথ্যচিত্র দেখানো হয়। সবাই খুব প্রশংসা করেন এই তথ্যচিত্রের।
গৌরকিশোর ঘোষ জন্ম শতবর্ষ উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি ডা. অমিত রায়, সম্পাদক সাহানা নাগ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক ড. পত্রালী ঘোষের আমন্ন্ত্রণে প্রচুর মানুষের উপস্থিতিতে সার্থক হয় আয়োজন। সুচারু ভাবে সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপিকা সোহিনী ঘোষ। দে'জ পাবলিশার্স-এর শুভঙ্কর দে ও সুধাংশুশেখর দে উপস্থিত ছিলেন। গৌরকিশোর ঘোষ-এর সঙ্গে দে'জ পাবলিশার্সের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার কথা তুলে ধরেন সুধাংশুশেখর দে। ওইদিন সন্ধ্যায় উপস্থিত দর্শক সাক্ষী থাকলেন এক বিরল সন্ধ্যার।

"২০ জুন গৌরকিশোর ঘোষের জন্ম শতবর্ষ শুরু হল।  তাঁর জন্মদিনে তাঁকে নিয়ে প্রকাশিত হল একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকলন। সংকলনটি সম্পাদনা করেছেন সোহিনী ঘোষ।

জন্মদিনে দে'জ পাবলিশার্সের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সুধাংশুশেখর দে ও শুভাঙ্কর দে। 

গৌরকিশোর ঘোষের জন্ম ২০ জুন ১৯২৩।
পূর্ববাংলায় (অধুনা বাংলাদেশ) শিলাইদহের হাটগোপালপুরে মাতুলালয়ে তাঁর জন্ম। পিত্রালয় যশোর জেলার মথুরাপুর গ্রাম। বাবা ছিলেন স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হোমিওপ্যাথ ডাক্তার। বাবার সমাজসেবার কারণে দারিদ্র ছিল নিত্য সহচর। হাতেখড়ি হয়েছিল শ্রীহট্ট জেলার চা- বাগানে নবীনচন্দ্র পালের পাঠশালায়। পরবর্তীকালে বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ হয় নবদ্বীপ বকুলতলা হাই ইংলিশ স্কুল থেকে। পরে বিদ্যাসাগর কলেজের নবদ্বীপ শাখা থেকে আইএসসি পাশ করেন। সেখানেই তাঁর বিদ্যায়তনিক পাঠের সমাপ্তি। সংসার চালানোর জন্য নানা ধরনের কাজ তাঁকে করতে হয়েছিল বহু পেশা বদলে শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকতায় স্থিত হন। সৎ , নির্ভীক সাংবাদিক হিসেবে গৌরকিশোরের পরিচিতি। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকের মত প্রকাশের অধিকার প্রসঙ্গে তিনি ছিলেন এক আপসহীন সংগ্রামী। এই কারণে একাধিকবার তাঁর প্রাণসংশয় হয়। নকশালদের খতম তালিকায় নাম উঠেছিল তাঁর। ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময় মত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার দাবি করায় তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়। সাহিত্য এবং সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি বহু পুরস্কার পেয়েছেন। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য— আনন্দ পুরস্কার (১৯৭০), কো জয় উক স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৬), ম্যাগসেসে পুরস্কার (১৯৮২), বঙ্কিম পুরস্কার (১৯৮২)। এছাড়াও তাঁর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিস্তারে প্রশংসনীয় উদ্যোগের জন্য লাভ করেছেন বহু সম্মান।"

দাম : ৪৫০ টাকা