*মানুষের জন্য ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়। 

যত প্রথা, নিয়ম, রীতি, নীতি আছে, সবকিছুই কিন্তু মানুষের জন্য। 

একটা সময় মানুষ ছোট ছোট দল ও গোত্রে বিভক্ত ছিল। দিনে দিনে অসভ্য মানুষ সভ্য হয়েছে। 

দল বা গোত্রের জায়গায় দেশ-মহাদেশ হয়েছে। মানুষের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে রাষ্ট্র।* *মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ রাখার জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য বড় বড় সংস্থা তৈরি হয়েছে।

 বহুকাল আগেই ধর্ম অনুসারে মানুষের মধ্যে কতগুলো জাতের উদ্ভব ঘটেছে—মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি।

 ধর্ম দিয়ে বিভক্ত হয়েছে মানুষ। এসব প্রধান প্রধান ধর্মের আবার শাখা-প্রশাখাও হয়েছে। 

কখনো দেশ ভাগ হয়েছে ধর্ম দিয়ে, ভাষা দিয়ে, কখনো জাত দিয়ে; আবার ভৌগোলিক কারণেও হয়েছে। সাদা-কালোয় ভাগ হয়েছে মানুষ।* 

*আদর্শের কারণেও নামে শোষিত হয়েছে মানুষ। পুরো পৃথিবী তথা ইউরোপ-এশিয়ায় হত্যা করা হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। 




এখনো প্রতিদিন মানুষ মরে আফ্রিকায়, আরব বিশ্বে। কারণ ক্ষমতা ও আধিপত্য।* *রাজনীতির চক্রে আমাদের ভাগ করা হয়েছিল ধর্মের দোহাই দিয়ে। 

আরও পরে মুক্তিযুদ্ধ শেষে হল বাংলাদেশ , শুরু হলো নতুন যাত্রা। দেশ হয়ত হল কিন্তু বিভেদ গেল না। আধিপত্যের লড়াই শুরু হলো আবার।

 শুধু ক্ষমতার জন্যই বলি হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

* *মধ্যযুগের কবি চণ্ডীদাস বলেছিলেন, ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’। এত ভাগাভাগি না করে, এত মানুষ না মেরে সবাই মিলে কি সুন্দরভাবে বাঁচা সম্ভব নয়?

 সবাই হয়তো এক মতের হবে না, কিন্তু তাই বলে আমরা পাশাপাশি গণতান্ত্রিক রীতিতে চলতে পারব না, সেটা কেমন কথা! পৃথিবীর বহু দেশ কিন্তু অনেক দূর এগিয়েছে।

 আমাদের একটা কথা মনে রাখা দরকার, মানুষ বাঁচলেই কিন্তু আদর্শ বাঁচবে, চেতনা বাঁচবে। আদর্শ জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়। এটা ধারণ করার বিষয়, সংস্কৃতির বিষয়।

 মানুষকে মেরেও তা সম্ভব নয়।

* *আমার সঙ্গে কারও মিলল না বলে তাকে শেষ করে দিতে হবে, এটা জঙ্গলের নীতি। মানুষ বিপরীত আদর্শের সঙ্গেও পাশাপাশি চলতে পারে, এটাই মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ। 
এটাই সহনশীলতা, অর্থাৎ অন্যের মত সমর্থন না করলেও তাকে শ্রদ্ধা করা। এ গুণ অর্জন করা তাই খুবই প্রয়োজন।

* *সহনশীলতার অভাব ঘটলে কী হয়, তা এখন আমাদের চোখের সামনে জাজ্বল্যমান। 

এমন দেশ আমাদের কারও কাম্য নয়, এমন রাষ্ট্র কারও কাম্য নয়।
* *তাই আমার ভারত অমর ভারত।।*