তখনই সাহেব তুই, টকটকে লাল, তখনই পাতাকে ছুঁয়ে সবুজে সবুজ! আবার হঠাৎ দেখি গাছের বল্কলে--- তারই আদেশে তুই আগাগোড়া ছাল! বর্ণচোরা-গিরগিটি!তোকে প্রশ্ন করিঃ অভিযোজনের কী এ-অভিনব চেষ্টা? তাই-কি এমন করে রং পাল্টাস?
____________________________
গাছের পাতায় ডালে ঘুরতে-ঘুরতে দেখেছিস গাছেদের 'ন্যাস্টিক চলন'? শিখেছিস বাঁচবার 'হ্যাপ্টোন্যাসটি- রীতি'?
কী করে কলস পত্রী ষড়যন্ত্র করে .....
পোকাদের দিন-রাত ধরে ধরে খায়? তাই- এ সাবধানতা; রংয়ে আড়ালে....
ভীরু শামুকের মতো হোলি গোটাটাই?
__________________________
অথচ আমরা, দেখ্, অমৃত- সন্তান, বিরুদ্ধ -শক্তির কাছে মাথা নোয়াই-না। প্রয়োজনে প্রাণ ঢেলে ক্ষুদিরাম হই...
মাস্টার-দা হতে জানি, ভগৎ সিং কেউ!
তবু কেউ স্বাধীনতা খোয়াতে পারিনা ...
স্বাধীনতা-লুন্ঠকের স্পর্ধা-কে ছাড়িনা!
তবেই-না মুক্ত আজ স্বদেশ-সমাজ! কা-পুরুষ সরীসৃপ! ঘৃণ্য হয়ে বাঁচ!
________________________
কিন্তু গিরগিটি, তোকে, এত বকা-ঝকা করে-ও নিজের দিকে চমকে তাকাই!
আমার বিবেক তোর ঘাড়ের মতই
না-সূচক মাথা নেড়ে আমাকে ধমকায়!
_____________________________
আমার ভেতরে এক কণ্ঠস্বর বলেঃ আমরা এখন আর মানুষেই নেই....
হয়েছি বনের পশু, শকুনির ভাই। শ্বাপদ জন্তুরা তবু স্বজাতির মাংস চর্ব্য-চুষ্য-লেহ্য-পেয় ভাবতে পারে না! অথচ আমরা কেউ স্ত্রী কিংবা বোনের কাটা-মুন্ডু হাতে ধরে উল্লসিত হই!
স্নেহ-প্রেম-ভালোবাসা বুক থেকে নেমে মাকড়সার লালসার জাল হয়ে গেছে! কৃতজ্ঞতা-লোকাচার-ধর্মাচার সব....
অভিনয়-কসরতের মঞ্চকে দাপায়!
_____________________
গিরগিটি! আজ আমরাই গিরগিটি! স্বার্থ-চরিতার্থতার কাছে পৌঁছেছি। নিজ-গুণে শিখে গেছি রংয়ের
আপোস।
মুদ্রার এ-পিঠ থেকে ওই-পিঠে চেপে এক পুকুরের মাছ, পুকুর পাল্টেছি!
_______________
অতএব, সিদ্ধান্ত-টা দাঁড়ালো এই-যেঃ মুখে হাসি,গায়ে কাচা-কাপড় রেখে-ও, মানুষ চতুর গিরগিটির থেকে-ও!!
।। সমাপ্ত।।
0 Comments