মা যেমন ছেলেকে একটি বার-ও
ভুলতে পারেনা। আর, ঠিক তার মতো,
মাটিকে নিজের কোলে তুলে নিয়েছিস।
মুখে তোর ভাত নেই, তবু হাসি-মুখে,
চুমু খাস্ যুগে-যুগে মাটির মুখেই!
অবিরাম.......
বুভুক্ষু ক্ষেত-কে দিলি অষ্টাঙ্গের ঘাম....
প্রাণ-নিঙড়ানো তোর 'সাত্ত্বিক প্রণাম'!
আর, এর প্রতিদানে যে-আহার্য তোকে
মাটি দিলো; তুই তুলে দিলি অন্যকে?
__________________
অথচ.......
ইতিহাস বলছে যে, 'ছিয়াত্তরে' আর
'পঞ্চাশে' চাষিরা হলো লাশের পাহাড়!
ফ্যান দিতো কেউ-কেউ, তবু কোনো হাত,
এগিয়ে দিতো-না মুখে এক থালা ভাত!
ছিলো না লজ্জার বোধ, ছিলো ভন্ডামি-টা,
আজও আছে দরদীর মুখোশটা আঁটা!
_____________________
ওরা-কি বলছে? "মাটি! তোকে জল দেবো ...
চাষী! তোকে পেট ভরে ভাত খেতে দেবো।
চাষী-বউ! তোর মুখে হাসি আনবোই---
তোর ছেলেদের দেবো 'ঝলমলে দিন'!
বেকারত্বের কফিনে পেরেক ঠুকবো!"
এ-সব কোনো কিছুই ওরা বলছে না।
শুধু হুঙ্কার ছাড়ছেঃ নাগরিকত্বের
প্রমাণ দেখানো চাই! বাপের ঠিকানা
আছে? কতো জন্ম-সাল? তার-ও বাপের?
চৌদ্দ-গুষ্টি নিয়ে টানাটানির আইন!
ঠিক যেন রাজধানী পরিবর্তনের---
ফতোয়া জারি করছে বিন- তুঘলক!
____________________
সেদিন-তো নীল-চাষে কতো বেত খেলি!
এছাড়া শুনলি কতো 'গরীবী হঠাও'!
কতো বুলি কপচালো 'সবুজ বিপ্লব'!
কারো হাতে কেটে গেল 'চৌত্রিশ বছর'!
তুই শুধু হাতে পেলি আমড়ার আঁঠি!
_____________________
এইভাবে আর কতো হবি প্রতারিত?
নিজে-ও জানিস, আর আমরা-ও জানি।
স'য়ে যাবি এ-ভাবেই তামাশা-মস্করা,
হাত তোর ভুলবেনা তবু চাষ করা!
___________________
বেশ তাই হোক্.....
মাটির মানুষ তুই, আমাদের- ও মা!
শুধু একবার তোকে দেখতে ইচ্ছেটা
হয়; তুই যেন হয়েছিস 'সৎ-মা'!
হাতে তোর দশ-নখে ধরা বিষ্-বাটি,
মুখে পিশাচের হাসি, দু চোখে আগুন!
পারবি না? পারবি না, একবার শুধু,
লাঙ্গলের বোঁটা ছেড়ে----
ধরতে আমার এই হাত?
আর, সভ্যতার ফর্সা মুখে অতর্কিতে, ঘোড়ার পিছন পা'র মতো পিছু ফিরে---- ঝেড়ে দিতে, দাঁত-ভাঙ্গা একখানা লাথ্??
।। সমাপ্ত।।
0 Comments